করোনা ভাইরাসের আতঙ্কে বাংলাদেশে থানকুনি পাতা খাওয়ার গুজবের রেশ কাটতে না কাটতেই আকাশে হঠাৎ করে সূর্যের চারপাশে বৃত্তাকার রংধনুর মতো দেখা গেছে। বৃহস্পতিবার (১৯ মার্চ) দুপুর ১২টার দিকে দেশের বিভিন্ন স্থানের মানুষের নজরে আসে এ দৃশ্য। ফেনীর আকাশেও দেখা যায় তা। এ নিয়ে সাধারণ মানুষের মাঝে বেশ উৎকণ্ঠার সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই তার ছবি তুলে ফেসবুকে পোস্ট করেছেন। বিষয়টি নিয়ে ফেসবুকে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন মানুষ।


২০১৪ খ্রিষ্টাব্দে যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রভাবশালী পত্রিকায় প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে জানা যায়, এমন ছবি আগেও পৃথিবীর কোথাও কোথাও দেখা গেছে।


বিজ্ঞানীরা বলছেন, এ নিয়ে শংকার কিছু  নেই। এটা হল ২২ডিগ্রি হ্যালো রিং। মোটামুটি সাধারণ একটা ঘটনা প্রকৃতিতে, বিরল কিছু না। মেঘে জমে থাকা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বরফ কণায় আলোর রিফ্র্যাকশন, রিফ্লেকশন হওয়ার মাধ্যমে এই আলোক ঘটনার দেখা মেলে। আলো ষড়ভূজাকার বরফ কণার ভেতর দিয়ে যাওয়ার সময় ২২ডিগ্রি বেঁকে যায়। কিন্তু এটা দেখার জন্য দর্শকের সাপেক্ষে তার চোখে আসা আলোর জন্য চারপাশের মেঘে জমা বরফকণাগুলোকে বিশেষ সজ্জায় থাকতে হয়। তাই অনেকে হয়তো এই রিং দেখেন, আবার একই সময় অন্য যায়গায় কেউ সূর্য দেখলেও কোন হ্যালো দেখেন না। কারণ তার অবস্থান সাপেক্ষে সেটা দেখার মত কোন পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। অনেকটা রংধনুর মতই ঘটনা। রংধনুতে আলো পাণির গোলাকার কণার ভেতর দিয়ে যাওয়ার সময় প্রিজম ইফেক্টের কারণে সাত রঙে ভাগ হয়, আর হ্যালোর ক্ষেত্রে এখানেও আলো তার রঙে ভাগ হয়ে যায় কিন্তু বরফ কণার ৬ তলের সাথে জ্যামিতিকভাবে অবস্থান করার কারণে এর প্রিজম ইফেক্ট একটু ভিন্নরকম, রংধনুর মত রঙিন মনে হয়না, অনেক হালকা রঙিন দেখায়।


২০১৮ সালে পাবনার আকাশে এটা দেখা গিয়েছিলো। এ ব্যাপারে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থার (নাসা) ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়, এই বলয় ২২ ডিগ্রি হ্যালো নামে পরিচিত। বিষয়টি ব্যাখ্যা করে বিজ্ঞানীরা বলেন, বায়ুমণ্ডলের স্ট্রাটোস্ফিয়ারে ছোট ছোট বরফকণা রয়েছে। সূর্যের আলো স্ট্রাটোস্ফিয়ারে পৌঁছানোর পর বরফে পড়ে তা প্রতিসরণ হয়। হ্যালো ২২ ডিগ্রি থেকে ৫০ ডিগ্রি পর্যন্ত হতে পারে। তবে ২২ ডিগ্রি হলেই এই বলয় সবচেয়ে উজ্জ্বল হয়। বায়ুমণ্ডলে জমে থাকা বরফ কণা থেকে প্রতিসরণ হওয়ায় বৃষ্টিরও সম্ভাবনা থাকে।