আর মাত্র একদিন পরেই শুরু হবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ‘মুজিববর্ষ’। দেশব্যাপী সাড়ম্বরে মুজিববর্ষ উদযাপনের কথা থাকলেও বিশ্বজুড়ে সৃষ্ট ‘করোনা ভাইরাসের’ কারণে অনুষ্ঠান সূচিতে পুনর্বিন্যাস করা হয়েছে। আগামী ১৭ই মার্চ ফেনীতেও মুজিববর্ষ উদযাপনের জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি নির্ধারিত থাকলেও তা কিছুটা কাটছাঁট করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ফেনী জেলা প্রশাসক মোঃ ওয়াহিদুজজামান।


আজ রবিবার (১৫ মার্চ) জেলা উন্নয়ন ও সমন্বয় সভায় জেলা প্রশাসক বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ১৭ই মার্চ শুরু হতে যাচ্ছে। দিনটি উদযাপনের জেলা প্রশাসন গৃহীত পূর্বের কর্মসূচি ঠিক থাকবে। শুধু করোনা ভাইরাসের কারণে মুজিববর্ষের আয়োজন সংক্ষিপ্ত করায় মুজিববর্ষে জনসমাবেশ হবে না। সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিজস্ব অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দিনটি উদযাপন করবে।


জেলা প্রশাসন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার প্রতুষ্যে তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসটির কর্মসূচি শুরু হবে। এরপর সকাল ৯টায় শহরের জেল রোডে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে স্মৃতিস্তম্ভ থেকে একটি বর্ণাঢ্য র‌্যালি শুরু হয়ে শহরের মিজান রোড হতে ট্রাংক রোড ঘুরে একইস্থানে এসে সমাবেশে মিলিত হবে। র‌্যালি ও সমাবেশে শুধু সরকারি কর্মকর্তা, কর্মচারী ও রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ অংশ নেবেন। শহরের স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ শিক্ষার্থী প্রতিষ্ঠানে দিবসটি উদযাপন করবে।


এসময় মুজিববর্ষ উদযাপনে সকল সরকারি বেসরকারি দপ্তরের কর্মকর্তাদের নির্দিষ্ট সময়ে উপস্থিত থাকার নির্দেশনা দেন জেলা প্রশাসক। সভায় মুজিববর্ষ উদযাপনের লক্ষ্যে বিভিন্ন নির্দেশনা প্রদান করেন। তিনি বলেন, ১৭ মার্চ রাত ৮টায় প্রধানমন্ত্রী আনুষ্ঠানিকভাবে মুজিববর্ষের উদ্বোধন করবেন। শহরের ট্রাংক রোডের শহীদ মিনারে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটি বড় পর্দায় সরাসরি সম্প্রচার করা হবে। সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে।


সভায় মুজিববর্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ পালনে সবাইকে সঠিকভাবে কাজ করার আহ্বান জানান জেলা প্রশাসক। এসময় তিনি মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে ভিক্ষুকদের পুর্নবাসনের ব্যবস্থা করতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের নির্দেশ প্রদান করেন।


একই সভায় বাখরাবাদ গ্যাস কর্তৃপক্ষকে অবৈধভাবে গ্যাস সংযোগ উচ্ছেদ করতে ব্যবস্থা গ্রহণ করার নির্দেশনা দেন তিনি। সভায় পৌরসভায় পানির অপচয় বন্ধে সবাইকে সচেতন থাকার আহ্বান জানান জেলা প্রশাসক।


এসময় জেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বাস্তবায়নাধীন উন্নয়ন কাজের বড় ভবন তৈরীতে মন্ত্রণালয়ের নকশা হলেও ডিসি কমিটি অথবা পৌরসভার অনুমতি নিতে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরকে নির্দেশ দেন তিনি।


আসন্ন রমজান মাসে দ্রব্যমূল্যের দাম স্থিতিশীল রাখতে বাজার তদারকি করতে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক বিভাগকে বলেন তিনি।


প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ল্যাপটপ আছে কিনা তা নিশ্চিত করা, এছাড়াও মাল্টিমিডিয়া ক্লাস নিয়মিত করানো হয় কিনা তা মনিটরিং করতে শিক্ষা অফিসকে নির্দেশ প্রদান করেন জেলা প্রশাসক।


সভায় বন বিভাগ জানায়, মুজিববর্ষে সারা বাংলাদেশে ১ কোটি গাছ লাগানো হবে। এসময় জেলা প্রশাসক বলেন, বৈদ্যুতিক খুঁটির কারনে গাছপালার যাতে ক্ষতি না হয় সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে। সবাইকে বেশি বেশি গাছ লাগাতে হবে।


সভায় নদী-খাল দখলমুক্ত করতে অবৈধ উচ্ছেদ অভিযান অব্যাহত রাখা হবে বলে জানান তিনি।


সভায় জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা কাজী সলিম উল্লাহ জানান, মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ১০০ টি করে গাছ লাগানো হবে এবং সারা বছরব্যাপী তা প্রতিপালন করা হবে। তিনি জানান, মুজিববর্ষে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দোয়া মাহফিল, দেয়ালিকা প্রদর্শনী, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে। করোনা ভাইরাসের কারণে প্রত্যাহিক সমাবেশ বন্ধ রেখে ক্লাস রুমে জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়।


সভায় সিভিল সার্জন ডাঃ সাজ্জাদ হোসেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোছাঃ সুমনী আক্তার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) সুজন চৌধুরী, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবু দাউদ মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফাসহ বিভিন্ন উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।