ফেনীতে নবাগত পুলিশ সুপার মো. শফিকুল ইসলাম বলেছেন, জাতীয় নির্বাচনে একজন ভোটার অত্যন্ত নিরাপদে কেন্দ্রে যাওয়া থেকে বাড়ি পৌঁছানো পর্যন্ত নিরাপত্তা নিশ্চিতে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। বিগত সময়ে নির্বাচনগুলোতে যেভাবে প্রভাবিত করা হয়েছিল সেখান থেকে বের হয়ে এবার নির্বাচনে পুলিশ সক্ষমতা প্রমাণ করতে চায়। পুলিশের সম্পর্ক হবে নির্বাচনী নিরাপত্তার সঙ্গে, নির্বাচন প্রক্রিয়ার সঙ্গে নয়-এটিও আমরা এবার প্রমাণ করতে চাই। সোমবার (১ ডিসেম্বর) বিকেলে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আয়োজিত মতবিনিয় সভায় এসব কথা বলেন পুলিশ সুপার।

পুলিশ ক্লিয়ারেন্সে টাকা আদায়ের অভিযোগ দুঃখজনক উল্লেখ করে মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, আমাদের দেশের অর্থনীতি যারা সচল রাখেন সেই প্রবাসীদের পুলিশ ক্লিয়ারেন্সে টাকা আদায়ের অভিযোগ অত্যন্ত দুঃখজনক। প্রথম দিনে এমন কিছু শুনব আশা করিনি। এ বিষয়ে আমি কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলব। এছাড়া টাকা দিয়ে কেউ নেগেটিভ রিপোর্টকে পজিটিভ করার সুযোগ নেই। যদি কখনো কোনো থানা থেকে আর্থিক লেনদেনের বিষয়ে কথা বলা হয় সেই বিষয়ে আমাকে জানালে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। অনলাইনের মাধ্যমে যেসব আবেদন করা হয় সেগুলোও যথাযথ প্রক্রিয়ায় হচ্ছে কিনা তা যাচাই করা হবে।

পুলিশ সুপার বলেন, থানায় গিয়ে সেবা পেতে ঘুষ বা এ ধরনের সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে আসতে চাই। ঘুষ না দিলে সেবা না পাওয়ার এমন ঘটনা ঘটলে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। মানুষের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত ও জেলা পুলিশের আওতাধীন সকল কার্যক্রম অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করা হবে। সবমিলিয়ে ফেনীবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিতে সকলের সহযোগিতা নিয়ে কাজ করব।

তিনি বলেন, শহরে ফুটপাত অবৈধ দখলের বিষয়ে অভিযান চলমান থাকবে। অনিবন্ধিত যানচলাচলে নিয়ন্ত্রণ ও প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে দস্যুতা রোধে গুরুত্ব দিয়ে কাজ করা হবে। জেলায় মাদক, কিশোর গ্যাং রোধে কাজ করা হবে। এছাড়া অবৈধ বালু উত্তোলনের বিষয়ে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করব। মানুষ যেন পুলিশের কাজে স্বস্তি ও আস্থা পান সেটুকু নিশ্চিত করব।

গত বছরের ৫ আগস্ট থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধারের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে শফিকুল ইসলাম বলেন, থানা থেকে অস্ত্র লুটের বিষয়ে ইতোমধ্যে এখানকার পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। আমাদের হারিয়ে যাওয়া সম্পদ ফিরিয়ে আনার বিষয়ে সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে।

জেলা পুলিশের এ শীর্ষ কর্মকর্তা আরও বলেন, আমার কাছে এসে ফুল দিয়ে ছবি তুলে বিশেষ সংখ্যতা পাবেন না। যে কয়দিন আছি ফেনীবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিত ও ভালো রাখতে কাজ করব। আল্লাহ যেন আমাকে সেই পথে রাখেন ও হেফাজত করেন, সেজন্য সকলের সহযোগিতা চাই।

এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মো. সাইদুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) নিশাত তাবাসসুমসহ জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও ফেনীতে কর্মরত গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, পুলিশ সুপার মো. শফিকুল ইসলাম ২৭তম বিসিএসে উত্তীর্ণ হয়ে ২০০৮ সালে প্রথম গোপালগঞ্জ জেলায় সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে যোগদান করেন। সর্বশেষ তিনি ডিএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। গত ২৭ নভেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ পুলিশ-১ শাখা থেকে জারি করা প্রজ্ঞাপনে তাকে ফেনীর পুলিশ সুপার হিসেবে পদায়ন করা হয়।